আমার মুখের কথা তোমার নাম দিয়ে দাও ধুয়ে, আমার নীরবতায় তোমার নামটি রাখো থুয়ে। রক্তধারার ছন্দে আমার দেহবীণার তার বাজাক আনন্দে তোমার নামেরি ঝংকার। ঘুমের 'পরে জেগে থাকুক নামের তারা তব জাগরণের ভালে আঁকুক অরুণলেখা নব। সব আকাঙক্ষা-আশায় তোমার নামটি জ্বলুক শিখা। সকল ভালোবাসায় তোমার নামটি রহুক লিখা। সকল কাজের শেষে তোমার নামটি উঠুক ফ'লে, রাখব কেঁদে হেসে তোমার নামটি বুকে কোলে। জীবনপদ্মে সংগোপনে রবে নামের মধু, তোমায় দিব মরণক্ষণে তোমারি নাম বঁধু।
বিকেলবেলার দিনান্তে মোর পড়ন্ত এই রোদ পুবগগনের দিগন্তে কি জাগায় কোনো বোধ? লক্ষকোটি আলোবছর-পারে সৃষ্টি করার যে বেদনা মাতায় বিধাতারে হয়তো তারি কেন্দ্র-মাঝে যাত্রা আমার হবে-- অস্তবেলার আলোতে কি আভাস কিছু রবে?
প্রত্যুষে দেখিনু আজ নির্মল আলোকে নিখিলের শান্তি-অভিষেক, তরুগুলি নম্রশিরে ধরণীর নমস্কার করিল প্রচার। যে শান্তি বিশ্বের মর্মে ধ্রুব প্রতিষ্ঠিত, রক্ষা করিয়াছে তারে যুগ-যুগান্তের যত আঘাতে সংঘাতে। বিক্ষুব্ধ এ মর্তভূমে নিজের জানায় আবির্ভাব দিবসের আরম্ভে ও শেষে। তারি পত্র পেয়েছ তো কবি, মাঙ্গলিক। সে যদি অমান্য করে বিদ্রূপের বাহক সাজিয়া বিকৃতির সভাসদ্রূপে চিরনৈরাশ্যের দূত, ভাঙা যন্ত্রে বেসুর ঝংকারে ব্যঙ্গ করে এ বিশ্বের শাশ্বত সত্যেরে, তবে তার কোন্ আবশ্যক। শস্যক্ষেত্রে কাঁটাগাছ এসে অপমান করে কেন মানুষের অন্নের ক্ষুধারে। রুগ্ন যদি রোগেরে চরম সত্য বলে, তাহা নিয়ে স্পর্ধা করা লজ্জা বলে জানি-- তার চেয়ে বিনা বাক্যে আত্মহত্যা ভালো। মানুষের কবিত্বই হবে শেষে কলঙ্কভাজন অসংস্কৃত যদৃচ্ছের পথে চলি। মুখশ্রীর করিবে কি প্রতিবাদ মুখোশের নির্লজ্জ নকলে।